
ওয়েবডেস্ক, বিশ্বজিৎ দাস: রাজ্যের শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারী ২০১৮ সালে সরকারি চাকরি পেয়েছিলেন। সেই সঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর ৩১ জন আত্মীয়ও চাকরি পেয়েছেন বলে জানা যায়। চাকরি পাওয়ার তালিকায় রয়েছেন পরেশের ড্রাইভারও। সোশ্যাল সাইটে সেই তালিকা তুলে ধরলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
পরেশ অধিকারী :-
স্ত্রী – মীরা অধিকারী (স্বাস্থ্য দপ্তর)
মেয়ে – অঙ্কিতা অধিকারী (বরখাস্ত)
ছেলে – হীরক জ্যোতি অধিকারী (ডাক্তার)
ভাই – অখিল অধিকারী (ক্লার্ক)
ভাইবউ – সাধনা অধিকারী (স্বাস্থ্য)
ভাইঝি – করমুক্তা অধিকারী (প্রাইমারি)
ভাইঝি – লতা অধিকারী মন্ডল (খাদ্য দপ্তর)
ভাইপো – বেন্টু অধিকারী (স্কুল ক্লার্ক)
ভাইপো – সেন্টু অধিকারী (প্রাইমারী)
ভাইপো – হরিপদ অধিকারী (প্রাইমারী)
ভাইপো – জয়দেব অধিকারী (খাদ্য দপ্তর)
বোন – ছায়া অধিকারী (ICDS)
বোন – মায়া অধিকারী (ICDS)
বোন জামাই – শৈলেন দাস (শিক্ষক)
বোন জামাই – শ্যামল সরকার (শিক্ষক)
শ্যালিকার মেয়ে – নুপুর রায় বর্মন (প্রাইমারী)
শ্যালিকার ছেলে – রামমোহন রায় (খাদ্য দপ্তর)
শ্যালিকার মেয়ে জামাই – হরিশ্চন্দ্র রায় (হাই স্কুল)
শ্যালকের ছেলে – সরেন রায় (প্রাইমারী)
শ্যালকের ছেলে বউ – পর্ণা সরকার রায় (প্রাইমারী)
শ্যালক – মনোরঞ্জন রায় (কলকাতা পুলিশ)
শ্যালক – উদ্ভব রায় (বিডিও অফিস)
শ্যালিকা – হীরা রায় (pwd)
শ্যালিকা – মায়া রায় (icds)
মামাতো ভাই – নিরঞ্জন রায় (কৃষি দপ্তর)
পিসতুতো ভাই – ভবেশ্বর রায় (প্রাইমারি)
ভবেশ্বর রায়ের দুই মেয়ে (প্রাইমারী)
শ্যালিকার ছেলে – মৃণাল রায় (প্রাইমারী)
মৃনালের স্ত্রী (প্রাইমারী)
ড্রাইভার – পিন্টু অধিকারী (খাদ্য দপ্তর)
ড্রাইভার – দ্বিজেন বর্মন (খাদ্য দপ্তর)
অনিয়ম, বেনিয়ম ভাবে চাকরি করা অঙ্কিতা অধিকারীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ সামনে আসে। যে তাঁর বাবা রাজ্যের মন্ত্রী হয়ে মেয়ে চাকরি পেয়েছেন। সেই মামলা কলকাতা হাইকোর্টে লড়ে মামলাকারী কোচবিহারের মেয়ে ববিতা সরকার কোর্টে জিতে গেছেন। তারপরেও কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক পরেশ অধিকারীর কাছেপিঠে সবমিলিয়ে ৩১ জন আত্মীয় সরকারি চাকরি পেয়েছেন। এই অভিযোগ সামনে আসার পরই হঠাৎই ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া স্থগিত করে দিল কলেজ সার্ভিস কমিশন। শনিবার কমিশনের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে জানানো হয়েছে, কমিশনের সংস্কারের কাজের জন্য জুন মাসে কোনও ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া হবে না।

প্রসঙ্গত, চাকরি খুইয়ে দুর্নীতির শাস্তি হিসাবে মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতা অধিকারীকে ‘অবৈধ’ ভাবে চাকরি করা ৪১ মাসের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এসবের মধ্যে শুক্রবার জানা গিয়েছে, স্কুলের চাকরি যাওয়ার পর কলেজে অধ্যাপনার দিকে পা বাড়াচ্ছেন বৈধ ভাবে চাকরি না পাওয়া অঙ্কিতা। নিউটাউনের আসন্ন ভবনে ২৬ এপ্রিল ইন্টারভিউ দিয়েছেন তিনি। স্কুলেও তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয় পড়াতেন। এবারে কলেজেও তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপিকা হতে চলেছেন বলে জানা যায়।
কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়া দুর্নীতির অভিযোগে যারা আন্দোলন করছেন তাদের বক্তব্য, প্রিমিসেসের কাজের জন্য ইন্টারভিউ বন্ধের সম্ভাবনা আগে ছিল না। ইন্টারভিউ বন্ধ করে আন্দোলনকারীদের দাবিকেই মান্যতা দিয়েছে সিএসসি ও সরকার।
এসএসসি-র নিয়োগ দুর্নীতির মতোই কলেজ সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন ২০১৮ -র নিয়োগ না পাওয়া মেধা তালিকাভুক্ত চাকরিপ্রার্থীরা। কিছুদিন ধরে সেই আন্দোলন চরমে পৌঁছেছে। কলকাতা শহরে কলেজ সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পথে নামতে দেখা যাচ্ছে পরীক্ষায় ভালো নাম্বার পেয়ে মেধা তালিকাভুক্ত চাকরিপ্রার্থীরা। ২০১৮ কলেজ সার্ভিস কমিশনের মেধা তালিকাভুক্তদের সংগঠনের পক্ষে ক্ষুদিরাম চক্রবর্তী বলেছেন “এসএসসির মতো সিএসসি ভবনে আধা-সেনা পাঠিয়ে ডেটা রুমের দখল নেওয়া হোক’।