
ওয়েবডেস্ক, 24 Hrs Tv: তিন দিনের জেলা সফরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেদিনীপুরের পর কর্মিসভা করলেন ঝাড়গ্রামে। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রামের বিশাল কর্মিসভা থেকে বিজেপিকে আক্রমণ শানালেন। তিনি বলেন, বিজেপি পরাজিত হয়ে রাজ্যে তুঘলকি-কাণ্ড চালাচ্ছে। পাশাপাশি সমস্ত কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে কাজে লাগিয়ে তুঘলকি কায়দায় দেশে শাসন করছে। সেই সঙ্গে আক্রমণ শানিয়েছেন বাম শিবিরকেও। তাঁর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, সিপিএমের রাজত্বে চাকরি, কাজ হত চিরকুট দিয়ে। একই সঙ্গে সতর্ক করেছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীদেরও।
এদিনের কর্মিসভা থেকে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিক অধিকার, স্বাধীনতার অধিকার খর্ব করছে। দেশের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলি দখলে আনছে তুঘলকি কায়দায় রাজ্যে শাসন চালানো এই বিজেপি’। এই সূত্রেই তিনি তুলে আনেন বাম আমলের কথা। বলেন, আগে একটা চিরকুট দিয়ে চাকরি হত। বদলি হত। সিপিএমের ৩৪ বছরে আমি অনেক খোঁজ নিয়েছি। আসতে আসতে ‘চ্যাপ্টার ওপেন’ করব। এত দিন ভদ্রতা করে এসেছি’। তাঁর আরও বক্তব্য, ‘কাজ করতে গেলে ভুল হয়। তাই সুযোগ দেওয়া উচিত। কিন্তু বিজেপি যদি ভাবে, গায়ের জোরে, জুলুম করে তৃণমূলকে স্তব্ধ করবে, তা হলে তৃণমূল জব্দ করবে। তৃণমূল এতটাই শক্তিশালী। এখানে হেরেও লজ্জা নেই। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচন রয়েছে। জিততে হবে। তাই এখন থেকে ওরা মিথ্যা প্রচার রটিয়ে বেরাচ্ছে। এত বড় রাজ্য। দু’টো-একটা ছোট ঘটনা ঘটবেই। এরই পাশাপাশি আগে তোমাদের রাজ্যগুলি দেখ। এই কথা বলেনও তিনি।
রাজ্যে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের অভিযান, বিক্ষোভ-আন্দোলনের আবহে ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক নেতামন্ত্রীকে তলব করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। দলের মহাসচিব তথা রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তলব করেছিল সিবিআই। বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায় যখন শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। সেইসময় স্কুল সার্ভিস কমিশনের(এসএসসি) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠেছিল। সেই প্রেক্ষিতেই রাজ্যের বর্তমান শিল্পমন্ত্রীকে হাজিরার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন সিবিআইয়ের অফিসাররা। সেই মোতাবেক সিবিআইয়ের নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে হাজিরাও দিয়েছিলেন। সাড়ে ৩ ঘণ্টা তাঁকে নিয়ে চলে জিজ্ঞাসাবাদপর্ব।
এর পাশাপাশি সিপিএম এবং গেরুয়া বাহিনীকে একসঙ্গে আক্রমণের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্কও করে দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কড়া হুঁশিয়ারি, ‘মনে রাখবেন, দলের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। দল সবার ঊর্ধ্বে। আর মানুষ তারও ঊর্ধ্বে। আমরা ক্যাডার। আর যাঁরা নিচে বসে রয়েছেন, তাঁরা সকলে নেতা। এই জন্যই আমাদের দলের নাম তৃণমূল। কারণ ‘তৃণ’ অর্থাৎ ঘাস, মাটি থেকে উঠে আসে। এখানে কেউ ‘আমি বড়’, ‘আমি কেউকেটা’-এ সব মনে করবেন না। সকলকে নিয়ে একসঙ্গে চলার সাথী হতে হবে। না হলে তাঁকে সেই জায়গায় রাখা হবে না’।