
24 Hrs Tv, বিশ্বজিৎ দাস : গরুপাচার-কাণ্ড ও ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মামলায় রাজ্য-হাইকোর্ট জেরবার। নির্বাচন পরবর্তী অশান্তি-কাণ্ডে মঙ্গলবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই আধিকারিকরা তলব করেছিলেন রাজ্যের বর্তমান শাসকদলের বীরভূমের নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এরপরেও তাঁকে আরও একবার হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন সিবিআই। বুধবার সিবিআইয়ের অফিস নিজাম প্যালেসে পাচার-কাণ্ডে জেরা করবার জন্য তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবারের মতো বুধেও তিনি হাজিরা এড়িয়ে গেছেন।
উল্লেখ্য, বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল নিজে ইচ্ছেপ্রকাশ করে সিবিআইয়ের দফতর নিজামে গিয়েছিলেন। সেই মোতাবেক সিবিআইয়ের নির্দেশানুযায়ী, তিনি পৌঁছে যান নিজাম প্যালেসে। সিবিআইয়ের দফতর নিজাম প্যালেসের ১৫ তলে অ্যান্টি কো-রাপশন রুমে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। এরপর জেরাপর্বের শেষে তাঁর কনভয় চলে যায় এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে। উডবার্ন ব্লকে অনুব্রতর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিনি ৪৫ দিন পর চলে যান নিজের গড় বীরভূমে। ধীরে ধীরে কেষ্টর কালো গাড়ি বাড়ির পথে প্রবেশ করতেই পুস্পবৃষ্টি শুরু হয়। তাঁর বাড়ির সামনে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো। গাড়ি থেকে তিনি নামতেই কর্মীদের ভিড়ে মিশে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বলেন, ‘আমি বেঁচে আছি, মরি নাই’। যদিও, দেড় মাস পর অনুব্রত নিজের এলাকায়, নিজের বাড়ি যাওয়ায় তারপর থেকে কোনও কর্মীসম্মেলনে অংশ নেননি জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
অনুব্রত মণ্ডলের এক আইনজীবী সঞ্জীবকুমার দাঁ-র দাবি, ‘দাদার শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। বুকে ব্যাথা রয়েছে’। পিজিতে ডাক্তার দেখানোর পর চিনার পার্কের ফ্ল্যাট থেকে তিনি চলে এসছেন বীরভূমে। এরপর থেকেই তিনি বাড়িতে রয়েছেন। বাড়ির বাইরে পা রাখছেন না। কোনও সম্মেলনে অংশ নেয়নি এখনও পর্যন্ত বলে আইনজীবী মারফত জানা গিয়েছে।

চিকিৎসক সূত্রের খবর, তাঁর মক্কেলকে ১৫ দিন বিশ্রামে থাকতে বলা হয়েছে। কারণ, তিনি এখনও অসুস্থবোধ করছেন। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেননি। আপাতত, বেড রেস্টেই রয়েছেন তৃণমূলের বীরভূমের প্রতাপশালী ও প্রভাবশালী অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। যদিও, সিবিআইয়ের উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তিরা নানান মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে তলব করলেও তিনি হাজিরা দেননি বলে সূত্রের খবর। বারেবারেই অনুব্রত মণ্ডল সিবিআইয়ের আধিকারিকদের বলে এসছেন সহযোগিতা করতে তিনি সদা সর্বদা প্রস্তুত।
প্রসঙ্গত, তিনি যখন কলকাতায় ছিলেন, তখন তিনি সিবিআইকে চিঠি পাঠিয়ে গরুপাচার-কাণ্ড মামলায় তাঁদের সামনাসামনি হতে হয়েছিল তাঁকে। এরপরেও দুটি মামলায় তাঁকে তলব করা হলেও একবারও সিবিআইয়ের হাজিরা হননি তিনি। বরং শারীরিক অসুস্থতা ও নানান কারণ দেখিয়ে অছিলায় হাজিরা এড়িয়েছেন বলে সিবিআই সূত্রের খবর।
কিন্তু, ৪৫ দিন পর বাড়ি গেলেও এখনও সিবিআইয়ের ডাকে সাড়া দেননি অনুব্রত মণ্ডল। এখন দেখার ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা ও গরুপাচার-কাণ্ড মামলা। এই দুটি মামলায় তিনি সিবিআই অফিসারদেরকে কবে সাহায্য করতে প্রস্তুত হন।