
ওয়েবডেস্ক, 24 Hrs Tv : সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের দিনের তিন ভাগের দু’ভাগ কাজকর্মের জন্য, বাকি একভাগ ঘুমের জন্য বরাদ্দ। ওই একভাগের উপরে নির্ভর করছে বাকি দু’ভাগ। কারণ ঘুম মস্তিষ্ক ও শরীরকে পূর্ণ বিশ্রাম দেয়। দিনে ষোলো ঘণ্টা ঠিকমতো পরিশ্রম করার জন্য আট ঘণ্টার ঘুম যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, অনিদ্রার মতো কষ্ট যাঁদের আছে, তাঁরাই বুঝতে পারেন।
ইদানীং অনেকেই ঘুমের নানা সমস্যায় ভুগছেন। ফলে ব্যাহত হচ্ছে শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা। ঘুমের ব্যাঘাতের মূলত তিনটি লক্ষণ লক্ষ্য করা যায়। যা থেকে বোঝা যায় কোনও ব্যক্তি ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন কি না।
১। এপাশ ওপাশ করেও ঘুম আসছে না ২। হঠাৎ হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাচ্ছে। ৩। দিনের বেলা ঘুমে চোখ জুড়িয়ে আসছে। এই ৩টি লক্ষণ থাকলে বুঝতে হবে ঘুমের সমস্যা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ইনসমনিয়া: এককথায় অনিদ্রা। অনেকে আছেন যাঁরা রাতের পর রাত শুয়ে জেগে থাকেন, ঘুমোনোর চেষ্টা করলেও তাঁদের ঘুম আসে না। আবার ঘুমোনোর পর মধ্যরাতে জেগে যান। অনেক চেষ্টার পরও আর ঘুমোতে পারেন না। অনেকে এটাকে খুব সাধারণ ব্যাপার মনে করে গুরুত্ব দেন না। কিন্তু, সারা দিনের কাজকর্ম শেষে শরীর ও মস্তিষ্কের বিশ্রাম দরকার হয়। ঘুমের এই সমস্যা নিয়মিত চলতে থাকলে তা অসুখে পরিণত হয়। ডাক্তারি পরিভাষায় তাকেই বলে ইনসমনিয়া। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাই এই রোগের মূল কারণ।
নার্কোলেপসি: এটা এমন রোগ যাতে রোগীর মস্তিষ্কে ঘুমোতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার চক্রটা ভেঙে যায়। ফলে সারাদিন ক্লান্ত লাগে। এমনকী অনেক সময় পেশির উপর থেকে নিয়ন্ত্রণও চলে যায়। কোনও কাজ করার মাঝে রোগী হঠাত্ ঘুমিয়ে পড়েন। ফলে তাকে অবসাদ গ্রাস করে। শুরু হয় মাথার যন্ত্রণা। এই রোগে আক্রান্ত হলে অনেক সময় স্মৃতি শক্তিও লোপ পায়।
রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম: বিছানায় শোওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এক অস্বস্তিকর অনুভূতি ঘিরে ধরে। অস্বস্তিটা সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয় পায়ে। মনে হয়, কিছু একটা যেন ওগুলো বেয়ে উঠে আসতে চাইছে। অস্বস্তি এড়াতে অনেকে পা নাড়াতে থাকেন। তাতে কিছুটা আরাম মেলে। এটাকেই ডাক্তারি পরিভাষায় বলে আর এলএস বা রেস্টলেস লেগস সিনড্রোম। রেস্টলেস লেগস সিনড্রোমের রোগীর সংখ্যা দিন-দিন বাড়ছে।
মুক্তির উপায়: ১। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত তিন-চার ঘণ্টা আগে হালকা ব্যায়াম করলে সুফল মিলতে পারে। ক্যাফেইন, নিকোটিন, অ্যালকোহল পরিত্যাগ করতে হবে। ঘুমোতে যাওয়ার আগে অনেকক্ষণ ধরে মোবাইল, কম্পিউটার ইত্যাদিতে কাজ করাও বন্ধ করতে হবে।
২। যে ভাবে শুতে সবচেয়ে আরাম বোধ হয়, সে ভাবেই শোওয়া উচিত। ঘুমের আগে বই পড়া, মৃদু লয়ের গান শোনা অথবা ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করার অভ্যেস তৈরি করতে পারলে ভালো।
৩। শোওয়ার ঘর যেন যথাসম্ভব আরামপ্রদ হয়। খুব বেশি গরম অথবা ঠান্ডা যেন না হয়। চোখ এবং কানের গার্ড পরে ঘুমোনোর অভ্যেসও করা যেতে পারে।