
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনেও হামলা হবে, তা আগেই ঠাওর করেছিলেন নিরাপত্তাবাহিনীর মাথারা। তাই মঙ্গলবার সকালেই মাহিন্দা রাজাপক্ষ ও তাঁর পরিবারের বাকি সদস্যদের কলম্বোর ‘টেম্পল ট্রিস’ থেকে বের করে আনার প্রক্রিয়া শুরু করে দেয় প্রশাসন। কিন্তু, ততক্ষণে জনরোষ হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। ছিমছাম দোতলা সরকারি বাসভবন ঘিরে ফেলেছেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। তাঁদের স্লোগানে কান পাতা দায়। ব্য়ারিকেড কোথায়, কারও জানা নেই! গেট ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করছেন বিক্ষোভকারীরা। আর সেই চেষ্টায় তাঁরা যদি সফল হন, তাহলেই ঘটে যাবে ভয়ংকর ঘটনা!
এ যেন বিভীষিকা! দেশের সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধার করতে গিয়ে যে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে, তা আগেই আন্দাজ করেছিলেন শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর সদস্যরা। কিন্তু, পরিস্থিতি যে এতটা ভয়ংকর হয়ে উঠবে, তা তাঁদেরও কল্পনাতীত ছিল। সোমবার সকালে একপ্রকার বাধ্য হয়েই ইস্তফা দিয়েছিলেন মাহিন্দা রাজাপক্ষ। সেই খবর চাউর হতেই দেশজুড়ে তাণ্ডব শুরু করেন সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীরা। শাসকদলের নেতা, মন্ত্রীদের বাড়িতে এক-এক করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বাদ যায়নি রাজাপক্ষদের পৈতৃক প্রাসাদও ।
উদ্ধার অভিযান সফল হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমে গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন বাহিনীর আধিকারিকরা। তাঁরা জানান, কার্যত প্রাণ হাতে করে মাহিন্দা ও তাঁর পরিবারকে উদ্ধার করেছেন বাহিনীর প্রতিনিধিরা। এই অভিযানে যেকোনও মুহূর্তে তাঁরাও বিক্ষোভকারীদের শিকার হতে পারতেন! সংবাদমাধ্য়মকে জানানো হয়েছে, যখন এই উদ্ধারকাজ চলছে, ঠিক সেই মুহূর্তেই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের ভিতর অন্তত ১০টি পেট্রলবোমা উড়ে আসে! বিস্ফোরণের আঘাত আড়াল করেই কোনও মতে বের করে আনা হয় রাজাপক্ষ পরিবারকে!
তবে, এই ঘটনার পর থেকেই মাহিন্দা রাজাপক্ষ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তাঁরা কোথায় আছেন, তা কারও জানা নেই। মাঝে শোনা যাচ্ছিল, মাহিন্দা নাকি সপরিবার ভারতে পালিয়ে এসেছেন। কিন্তু, পরে জানা যায়, এই খবর ভুয়ো। এদিকে, গত কয়েক দিনের হিংসায় শ্রীলঙ্কায় অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা অসংখ্য। দেশজুড়ে গৃহযুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছে।