রেশনে “কাঁটা লাগা”,ই-কেওয়াইসি

Read Time:8 Minute

24HRS TV,ওয়েব ডেস্ক: সকলে ভাবছেন হয়তো রেশন দোকানে সেই জনপ্রিয় কাঁটা লাগা গান শুনতে পাবেন। আসলে তা নয়, রেশন গ্রাহকরা যাতে সঠিক পরিমাণের রেশন দ্রব্য থেকে বঞ্চিত না হয় সেই স্বার্থে খাদ্য দপ্তর প্রতিটি রেশন দোকানে নতুন ধরনের ওজন মেশিন দেওয়া শুরু করেছে। এই ওজন মেশিন সরাসরি যুক্ত থাকবে ePos মেশিনের সাথে। সরকারি স্কেল অনুযায়ী সঠিক পরিমাণের খাদ্যদ্রব্য ওই মেশিনে ওজন হলে তবেই ePos মেশিন থেকে বিল বের হবে এবং গ্রাহককে সেই পরিমাণের খাদ্যদ্রব্য দিতে হবে। গ্রাহকদের উচিত ওই নতুন ওজন মেশিনে ওজন দেখে হাতে কম্পিউটারাইজড বিল নিয়ে রেশন দ্রব্য বুঝে নেওয়া। আর এইখানেই তৈরি হয়েছে সমস্যা।

অভিজ্ঞ রেশন ডিলারদের একাংশের অভিযোগ- সমস্ত নিয়ম মেনে গ্রাহকদের দিনের পর দিন খাদ্যদ্রব্য বিলিবন্টন করলেও কেন্দ্র/রাজ্য কোন সরকারই রেশন ডিলারদের দুর্গাপূজা বা দীপাবলিতে কোন বোনাস দেয় না, নতুন এই ওজন যন্ত্রটি হল পুজোর বোনাস। নতুন ওজন যন্ত্রটি রেশন দ্রব্য বিলিবন্টন করার সময় ব্যবহার করলে, খাদ্য দপ্তরের সার্ভারে যা সমস্যা থাকে তাতে করে ঘন্টায় ৫ থেকে ৬ জনের বেশি পরিবারকে দুয়ারে অথবা দোকানে রেশন দ্রব্য দেওয়া যাবে না, এতে এক মাসের মধ্যে রেশনবিলি করা যাবে না। নতুন ওজন যন্ত্র টি খুব একটা মজবুতও নয়। ওজন যন্ত্র গুলি রেশন দোকানে ডেলিভারি করা হচ্ছে না, রেশন দোকান থেকে অনেক দূরে মেশিনগুলো রাখা হয়েছে, রেশন ডিলারের উপর দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে প্রত্যেকে ওই নতুন ওজন মেশিন গুলি নিজের দায়িত্বে নিজের খরচে রেশন দোকানে নিয়ে আসার। আরো অভিযোগ এই একই পদ্ধতি মেনে সমস্ত রেশন ডিস্ট্রিবিউটরদের এই আধুনিক ওজন মেশিন এবং ePos মেশিন দেওয়া হোক এবং যে পদ্ধতিতে রেশন ডিলাররা গ্রাহকদের রেশন দ্রব্য বিলিবন্টন করে সেই একই পদ্ধতিতে ডিস্ট্রিবিউটাররা যেন রেশন ডিলারদের সমস্ত রেশন দ্রব্য রেশন দোকানের সামনে গিয়ে ওজন করে কম্পিউটারাইজড বিল দিয়ে তা বুঝিয়ে দেয়।রেশন ডিলাররাও তাহলে সঠিকভাবে তাদের রেশন দ্রব্য অ্যালটমেন্ট অনুযায়ী বুঝে নিতে পারবেন। তবেই স্বচ্ছ ভাবে রেশন বিলিবন্টন করা সম্ভব হবে। রেশন ডিলাররা সঠিক পরিমাণে রেশন দ্রব্য না পেলে গ্রাহকদের সঠিক পরিমাণে রেশন দেওয়া অসম্ভব। একতরফাভাবে শুধুমাত্র রেশন ডিলারদের স্বচ্ছতা দেখলে হবে না, দেখতে হবে যেখান থেকে রেশন দ্রব্য আসছে সেই বিষয়ে সেই জায়গাতে খাদ্য দপ্তর ও আধিকারিকরা কতটা স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য তৎপর! আটার গুণগত মান অত্যন্ত খারাপ তাই আটার পরিবর্তে সমস্ত এলাকায় গম দিতে হবে, সামান্যতম ভুল ত্রুটি হলেই আধিকারিকরা রেশন ডিলারদের হেনস্থা জরিমানা করছে। ePos মেশিন, খাদ্য দপ্তরের সার্ভার এতটাই নিম্নমানের যে এই যন্ত্রের সাহায্য নিয়ে বিলি বন্টন করতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে, এই নিয়মের মাঝে পড়ে রেশন ডিলার এবং গ্রাহকদের মধ্যে ধৈর্যচ্যুতি ঘটছে ও নিয়মিত ঝামেলা হচ্ছে। তার সঙ্গে আবার এই নতুন ওজন যন্ত্রটি যুক্ত হলে বিলি বন্টনের সময় আরো খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হবে। সে ক্ষেত্রে সরকারের এবং দপ্তরের উচিত বিলি বন্টনের সময় প্রতিটি রেশন ডিলারের কাছে একজন করে খাদ্য দপ্তরের কর্মী ও নিরাপত্তার কথা ভেবে নিরাপত্তা রক্ষী রাখা উচিত। রেশন দোকানগুলিতে উন্নত মানের ফাস্ট কাজ করতে পারবে সেই রকম ePos মেশিন সরবরাহ করতে হবে, এই পদ্ধতি মেনে ওজন করলে সময় অনেক বেশি লাগবে সেক্ষেত্রে রেশন দোকানগুলির কর্মচারীর সংখ্যা এবং মেশিনের সংখ্যা বাড়াতে হবে ও একই সাথে ভারতবর্ষের রেশন দোকানদারদের কমিশন ওয়ার্ল্ড ফুড অর্গানাইজেশনের রিপোর্ট অনুযায়ী কুইন্টাল পিছু ৪৫৭ টাকা এবং মাসিক পঞ্চাশ হাজার টাকা সুনিশ্চিত করতে হবে। হ্যান্ডেলিং লস দিতে হবে। এই সমস্ত সমস্যা ছাড়াও আরও বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে সর্বভারতীয় সর্ববৃহৎ রেশন ডিলারদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস সপ্ ডিলারস ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ১লা ডিসেম্বর২০২৩ থেকে রাজ্যব্যাপী অনির্দিষ্টকালের জন্য রেশন দোকান বন্ধের ডাক দিয়েছে। এরপর ১৮ই জানুয়ারি নয়া দিল্লিতে রামলীলা ময়দানে ভারতবর্ষের সমস্ত রেশন দোকানদাররা জমায়েত হয়ে “সংসদ অভিযান” আন্দোলন শুরু হবে। রেশন গ্রাহক জীবিত থাকা সত্ত্বেও অথবা আধার লিঙ্ক করে থাকা সত্ত্বেও কোন কোন সময় হঠাৎ গ্রাহকদের কার্ডটি ডিএক্টিভেট অথবা লাল হয়ে যাচ্ছে। গ্রাহকের মোবাইলে মেসেজ পাঠানো হচ্ছে না। পুনরায় eKyc করার জন্য তাদের জানানো হচ্ছে। ওই মেসেজে উল্লেখ থাকছে রেশন দোকান থেকে eKyc করা যাবে, কিন্তু সমস্যা হল রেশন দোকানের ePos মেশিন থেকে আধার লিঙ্ক করলে অথবা গ্রাহকদের eKyc করলে মেশিন থেকে কম্পিউটারাইজড কোনরকম রিসিপ্ট বের হয় না, গ্রাহকদের মনে সন্দেহ তৈরি হয়, আর কোন কারণে পরের মাসে ওই গ্রাহক যদি রেশন থেকে কোন কারণে বঞ্চিত হয় তাহলে রেশন দোকানদারের সাথে ঝামেলা করবে।পরিবার কিছু একজন করে ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ অথেন্টিকেট করে রেশন দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে রেশন ডিলারদের পক্ষে পরিবারের এবং এলাকার সমস্ত গ্রাহকদের eKyc করা সম্ভব নয়।এই eKyc করার পারিশ্রমিক দেওয়া হয় মাত্র আড়াই টাকা যা বর্তমান সময়ে খুবই নগণ্য।সরকারের এবং খাদ্য দপ্তরের উচিত দপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীদের দিয়ে এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে গ্রাহকদের eKyc যাচাই করে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা বিচার করে পুনরায় রেশন কার্ডের শ্রেণীবিন্যাস করা অর্থাৎ উপযুক্ত গ্রাহকের হাতে উপযুক্ত রেশন কার্ড তুলে দেওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *