অগ্নিগর্ভ দেশ, পাকিস্তান-বধ করে শ্রীলঙ্কায় স্বস্তি ফেরালেন শনাকা-রাজাপক্ষেরা

 গোটা একটা দেশ জ্বলছে। রাস্তায় রাস্তায় শুধু প্রতিবাদীদের মিছিল। জনজীবন বিপর্যস্ত। সাধারণ মানুষ যাতে দু’বেলা দু’মুঠো খেতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে এগিয়ে এসেছেন কুমার সঙ্গকারা থেকে শুরু করে দেশের প্রাক্তন কিংবদন্তি ক্রিকেটারেরা। রাজনৈতিক অশান্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, আয়োজক হলেও এবারের এশিয়া কাপ (Asia Cup) দেশের মাটিতে করতেই পারেনি শ্রীলঙ্কা। বাধ্য হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে টুর্নামেন্ট সরিয়ে নিয়ে যেতে।

আর চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলায় জর্জরিত দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটালেন দাসুন শনাকারা। বিধ্বস্ত রোজনামচায় ফিরল সাময়িক স্বস্তি। ফাইনালে পাকিস্তানকে ২৩ রানে হারিয়ে এশিয়া সেরার মুকুট ছিনিয়ে নিল শ্রীলঙ্কা। ফেভারিট হিসাবে ফাইনালে নামলেও বাবর আজমদের জন্য বরাদ্দ রইল শুধুই হতাশা। শ্রীলঙ্কার ১৭০/৬ তাড়া করতে নেমে ১৪৭ রানে অল আউট পাকিস্তান (SL vs Pak)।

২০১৪ সালে শেষবার কোনও বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছিল শ্রীলঙ্কা। তার আট বছর পর ফের একটি বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠে চ্যাম্পিয়ন হল শ্রীলঙ্কা। যাদের এবারের এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হিসাবে ধরেননি কেউই। বরং ফেভারিট মনে করা হচ্ছিল ভারতকে। অথচ রোহিত শর্মারা সুপার ফোরের গণ্ডিও পেরতে পারেননি। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা সুপার ফোরে পরপর আফগানিস্তান, ভারত ও পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে। এবং ট্রফি জিতে নেন শনাকারাই।

প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে লড়াই করার মতো স্কোর তোলে শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কা করে ১৭০/৬। এশিয়া সেরা হতে গেলে পাকিস্তানকে তুলতে হতো ১৭১ রান। শেষ পর্যন্ত তার ২৩ রান আগেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান।

রবিবার টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন পাক অধিনায়ক বাবর আজম। প্রথমে প্রতিপক্ষকে অল্প রানে বেঁধে রেখে তারপর অঙ্ক কষে রান তাড়া করার কৌশল নিয়েছিলেন বাবর। শুরুতে তাঁর পরিকল্পনা সফল করে তুলছিলেন পাক বোলাররা। প্রথম ওভারেই কুশল মেন্ডিসকে (০) তুলে নেন নাসিম শাহ। যিনি এই ম্যাচে প্রথম একাদশে ফিরেছেন হাসান আলির পরিবর্তে।

এরপরই বল হাতে হ্যারিস রউফের দাপট। প্রথমে তিনি তুলে নেন পাথুম নিশাঙ্কাকে (৮ রান)। এরপর তাঁর শিকার হন দনুষ্কা গুণতিলকা (১ রান)। ২১ বলে ২৮ রান করে ফেরেন ধনঞ্জয় ডি’সিলভা। শাদাব খান ফিরিয়ে দেন দাসুন শনাকাকে (২ রান)। একটা সময় ৫৮/৫ হয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা এবং মনে করা হচ্ছিল একপেশে ফাইনালের সাক্ষী থাকতে চলেছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।

কিন্তু অন্যরকম ভেবেছিলেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও ভানুকা রাজাপক্ষে। ২১ বলে ৩৬ রান করেন হাসারাঙ্গা। রাজাপক্ষেও ছিলেন বিস্ফোরক মেজাজে। আগ্রাসী ব্যাটিং করে ৩৫ বলে দুরন্ত হাফসেঞ্চুরি ভানুকা রাজাপক্ষের। তাঁর ক্যাচ দুবার ফেলেন শাদাব খান। একবার সতীর্থ ফিল্ডার আসিফ আলির সঙ্গে সংঘর্ষও হয় শাদাবের। শেষ পর্যন্ত ৪৫ বলে ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

বল হাতে শ্রীলঙ্কার জয়ের নায়ক প্রমোদ মদুশান ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ৩৪ রানে ৪ উইকেট নেন প্রমোদ। হাসারাঙ্গা ব্যাট হাতে সফল হওয়ার পর বল হাতে তুলে নেন ৩ উইকেট। মাত্র ২৭ রান খরচ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *