হড়পা বানে তছনছ সিকিম! বাড়ছে মৃত্যু, নিখোঁজ বহু জওয়ান

Read Time:4 Minute

পায়েল মুখার্জী : 24Hrs Tv ওয়েব ডেস্ক : সিকিমের সিংতামের কাছে তিস্তার প্রবল জলোচ্ছ্বাস। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেনা ছাউনি। এরই মধ্যে আবার ধস নামতে শুরু হয়েছে। নিখোঁজ বহু জওয়ানও। প্রবল বৃষ্টির কারণে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে উত্তর সিকিম। বুধবার ভোরে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে লোনক হ্রদ ফেটে হুড়মুড়িয়ে জল নেমে আসে তিস্তায়। আচমকাই হড়পা বান আসায় তিস্তার জলস্তর বেড়ে যায়। আর তাতেই নিখোঁজ হয়ে যান সেনার ২৩ জওয়ান। সূত্রে খবর, বন্যা এবং বৃষ্টির কারণে দুজনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিস্তার জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে সেনার বহু গাড়ি এবং বেশ কয়েকটি সেনা ছাউনিও। শুরু হয়েছে তল্লাশি। জওয়ানদের নিখোঁজের খবরে উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের তরফে সমস্ত সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

প্রশাসন সূত্রে খবর, বেশ কয়েকটি জায়গায় ধসও নেমেছে। এই ঘটনার জেরে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চুংথাম। চুংথাম বাঁধ ভেঙে বিপুল পরিমাণ জল চলে আসে তিস্তা নদীতে। এর ফলে রীতিমত জলের তাণ্ডব চলে সেখানে। দু’পাশ ছাপিয়ে পাহাড়ি সিকিমে ধ্বংসলীলা চালাতে থাকে তিস্তা। সেনার তরফে জানা গিয়েছে, সিংতামে যে সেনার ছাউনি ছিল সেই ছাউনিতে জল প্রবেশ করে। জলের তোড়ে সিংতামে সেনার একটি ছাউনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জানা যাচ্ছে, খোঁজ মিলছে না ২৩ জওয়ানের। ছাউনির পাশাপাশি ভেসে গিয়েছে প্রায় সমস্ত কিছুই। জলের তলায় চলে গিয়েছে সেনার গাড়ি-সহ গোটা ছাউনি। জানা গিয়েছে, সিংতামের কাছে বারদাংয়ে সেনা ছাউনিটি ছিল। তিস্তা নদীর জল অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকায় উত্তর ও পূর্ব সিকিমে সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। প্রায় একই পরিস্থিতি উত্তরবঙ্গে। মালবাজারের মহকুমার গজলডোবায় তিস্তার একাধিক লকগেট খুলে দেওয়ায় হু হু করে জল ঢুকছে। ডুবেছে বহু রাস্তা। তিস্তার সংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

জলপাইগুড়ি জেলার বিশাল অংশ দিয়ে তিস্তা প্রবাহিত হয়ে প্রবেশ করে বাংলাদেশে। তারপর তা মিশে যায় ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে। তিস্তার বৃদ্ধি পাওয়া জলস্তরের জেরে ওই সব এলাকাই প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকাও। অতএব, বৃষ্টির তেজ বাড়লে তাই চিন্তা বৃদ্ধি পায় জলপাইগুড়ি-সহ গোটা উত্তরবঙ্গ এবং বাংলাদেশে। ইতিমধ্যেই এই দুর্ঘটনার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে তিস্তার উপর তৈরি একাধিক ব্যারাজে। প্রশাসনের আশঙ্কা, জলস্তর ২৫ থেকে ২৬ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এত বড় ঘটনা সিকিমের বুকে এই প্রথম জানাচ্ছেন সেনাবাহিনী। যে কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করেন সেনাবাহিনীর জওয়ানরা। এর আগে ২০১৩ সালে উত্তরাখণ্ড বিপর্যয় দেখেছিল গোটা ভারত। এবার সিকিমের এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখামুখি হওয়ায় আতঙ্কে সকলেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *