সীমান্তে জঙ্গি হামলায় ঘুম কেরেছে বসিরহাটবাসির !

Read Time:5 Minute

২৪ আওয়ার্স টিভি, ওয়েব ডেস্ক : ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মহকুমা বসিরহাট । আর এই বসিরহাট জুড়েই রয়েছে বিস্তীর্ণ সীমান্ত এলাকা। একদিকে যেমন স্বরূপনগর অন্যদিকে একেবারে হিঙ্গলগঞ্জের শেষ প্রান্ত হেমনগর অবধি রয়েছে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমানা। জল ও স্থল সীমান্ত মিলিয়ে বসিরহাটের মোট সীমান্তের পরিধি প্রায় ১৯২ কিলোমিটার। স্বরূপনগর, বাদুড়িয়া ও বসিরহাট ১ নম্বর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় রয়েছে প্রায় ৯২ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত। অন্যদিকে বসিরহাট এক নম্বর থেকে শুরু করে সুন্দরবনের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার রয়েছে জল সীমান্ত। আর এইসব সীমান্ত দিয়েই এক সময় বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের একাধিক জঙ্গি প্রবেশ করেছে এবং ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে নাশকতার ছককে বাস্তবে রূপায়ণ করেছে। বেশ কিছুদিন আগেই হাওড়া থেকে দুইজন যুবককে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সূত্রের খবর , তাদের সঙ্গে আইএসআইএস এর এক গভীর যোগসুত্র রয়েছে। কিন্তু এই বসিরহাটের সঙ্গে জঙ্গিচক্রের সম্পর্ক প্রায় আড়াই দশকের। কখনো বসিরহাটের এক নম্বর ব্লকের শাঁকচূড়া বা সোলাদানার মতো গ্রাম থেকে কখনো একেবারে সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জের চাড়ালখালি গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে সোহেল-জুবেলের মতো কুখ্যাত পাকিস্তানি জঙ্গি। পাশাপাশি মহম্মদ বিল্লালের মতো জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত যুবককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আবার সাম্প্রতিককালে বাদুড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার হওয়া তানিয়া পারভীন। তাই মোটের উপর বলা যায় বিগত প্রায় ২৫ বছর ধরে বসিরহাটের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জঙ্গি বা জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ও জঙ্গি সন্দেহে প্রচুর যুবক-যুবতী এমনকি কুখ্যাত নাশকতাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যেহেতু বসিরহাটের সঙ্গে জঙ্গি কথাটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত সেই কারণেই হাওড়া থেকে এই দুই জঙ্গি গ্রেপ্তার হওয়ার পরেই কিন্তু চিন্তা ভাজ পড়েছে সীমান্ত লাগোয়া চারটি ব্লক ও এক পৌর এলাকার কয়েক লক্ষ বাসিন্দাদের কপালে। তারা বলছেন ৮৫, ১১২ ও ১৫৩ নং ব্যাটেলিয়ানের বিএসএফ জাওয়ানরা সীমান্তবর্তী এলাকা গুলিতে টহল চালালেও জঙ্গি কথাটাই আতঙ্কের অন্য একটি নাম। সেই জন্য তারা যথেষ্টই আতঙ্কে ভুগছেন। স্বরূপনগর থানার কৈজুড়ী, হাকিমপুর, বিথারী ও গাবর্ডাহ্ পাশাপাশি বাদুড়িয়ার শায়েস্তানগর, বসিরহাট থানার পানিতর, ইটিন্ডা, ঘোজাডাঙ্গা ও অন্যদিকে সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ ও হেমনগর থানার সাহেবখালি, যোগেশগঞ্জ, কালিতলা, সামশেরনগরের মতো সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষজন যথেষ্টই আতঙ্কে আছেন।

বিগত দিনগুলিতে দেখা গিয়েছিল স্থল সীমান্ত তো বটেই এমনকি সুন্দরবনের রায়মঙ্গল, কালিন্দী, গোমতী ও ইছামতি নদী পেরিয়েও একাধিক জঙ্গি নাশকতা করার উদ্দেশ্যে এদেশে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিল। কখনো তারা গ্রামবাসীদের হাতে ধরা পড়েছে, আবার কখনো বিএসএফ বা এনআইএ তাদেরকে গ্রেফতার করেছে। আবার অনেক জঙ্গি সবার চোখে ধুলো দিয়ে চলে গিয়েছে ভারতবর্ষের সেইসব প্রান্ত গুলিতে যেখানে একাধিক নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। সীমান্তের মানুষ বলছেন বিএসএফের কড়া নজরদারি থাকলেও জঙ্গি শব্দ শুনলে তারা এখনো আতঙ্ক অনুভব করেন। তাই নতুন করে জঙ্গি ধরা পড়ায় সীমান্তবর্তী এলাকায় এসে একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে। যেমন বর্ডার পেরিয়ে জঙ্গিরা কিভাবে দেশে প্রবেশ করছে? কিভাবে নকল পরিচয় পত্র বানাচ্ছে এবং এই পরিচয় পত্র বানাতে তাদের কে সাহায্য করছে? জঙ্গিদের সাথে যোগাযোগ কিভাবে হচ্ছে, শুধুই কি সোশ্যাল মিডিয়া নাকি কাঁটাতার পেরিয়ে কেউ বা কারা দেশে প্রবেশ করছে? বর্ডার এলাকায় পাহারায় কি তাহলে ফাঁক রয়েছে? নাকি বর্ডার এরিয়াতে অন্য অসাধু চক্র সক্রিয় হয়েছে? এরকম একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে সীমান্তবর্তী এই এলাকা থেকে। যার সদুত্তর খুঁজতে মরিয়া প্রশাসন থেকে শুরু করে গোয়েন্দা বিভাগও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *