
আমফান মোকাবিলার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার
গতবছর ঠিক এই রকম সময়েই বাংলায় আছড়ে পড়েছিল আমফান। একই ঘটনা ঘটতে চলেছে এবছরও। এবার আর কিছু দিনের মধ্যেই ‘যশ’ নামক ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়বে বাংলার উপকূলবর্তী এলাকায়। এই ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য আমফান মোকাবিলার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য সরকার।
জানা গেছে, ঝড়ের গতি প্রকৃতি সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত না হলেও সম্ভাব্য বিপর্যয়ের আশঙ্কায় যাবতীয় প্রশাসনিক প্রস্তুতি সেরে রাখা হচ্ছে। রাজ্যের সচিবালয় নবান্নের কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম থেকে যাবতীয় প্রস্তুতির ওপর সার্বিক ভাবে নজর রাখা হচ্ছে।
তাছাড়াও আগামী মঙ্গল ও বুধবার মুখ্যমন্ত্রী নিজে ওই কন্ট্রোল রুমে থেকে যাবতীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করবেন। বিভিন্ন বৈঠক করে বিপর্যয় মোকাবিলার রূপরেখা প্রস্তুত করেছন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে মাইকের মাধ্যমে প্রচার চালানো হচ্ছে।মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। পাশাপাশি, সমুদ্রে থাকা মৎস্যজীবীদের আগামীকালের মধ্যে ফিরে আসতে বলা হয়েছে। উপকূল রক্ষী বাহিনীর তরফে জল ও আকাশপথে নজরদারি চালানো হচ্ছে।
অন্যদিকে আসন্ন দুর্যোগের আশঙ্কায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে মোতায়েন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই গুজরাত থেকে বাহিনীর ১২ টি দল রাজ্যে এসেছে। এছাড়াও ২ কোম্পানি এনডিআরএফ মোতায়েন করা হয়েছে উপকূলবর্তী জেলায় গুলিতে। খুব তাড়াতাড়ি আনা হবে আরও ২ কোম্পানি।
কিন্তু ‘যশ’ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দীঘা এই কারণে শনিবার ‘যশ’ নিয়ে প্রশাসনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে দীঘায় যান পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। তিনি দীঘা-ওড়িশা সীমানার পদিমা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ঘুরে দেখেন। এরপর তিনি জানিয়েছেন, “আমি রামনগর, কাঁথি এবং খেজুরির বিভিন্ন এলাকার পরিদর্শন করছি। যে সব এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হতে পারে সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের কোথায় সরানো হবে, কোথায় রাখা হবে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, “আমরা স্থানীয় হাসপাতালগুলিও ঘুরে দেখছি। বিপর্যয়ের পর যদি বিদ্যুৎ বিপর্যয় হয়, সেই সময় বিকল্প কী ব্যবস্থা রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সমুদ্রের বাঁধ নির্মাণের কাজও খতিয়ে দেখছি। কাদের, কোথায় কী ভাবে নিয়ে যাওয়া হবে তার পরিকল্পনা আজ রাতের মধ্যে সারা হয়ে যাবে। কেউ করোনা আক্রান্ত হলে তাঁদের সেফ হোমে রাখার যথোপযুক্ত ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।”