যে ‘প্রথম বউ’কে খাওয়াতে পারেনা, তার দ্বিতীয় বিয়ে করার অধিকার নেই !

Read Time:4 Minute

24 HrsTv, ওয়েব ডেস্ক : মুসলিম পুরুষদের একাধিক বিয়ের অধিকার নিয়ে বরাবরই একটও বিতর্কিত বিষয়। এই সংক্রান্ত একটি মামলায় নতুন ব্যাখ্যা তুলে ধরেছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। সম্প্রতি একটি মামলার শুনানিতে এলাহাবাদ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি আগের সংসার ভেঙে আর একটি নতুন বিয়ে করার অধিকারের সঙ্গে আর্থিক সঙ্গতি ও নারীর মর্যাদা রক্ষার প্রশ্ন তুলে ধরেন।

এক মুসলিম পুরুষ পারিবারিক আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আর্জি জানান। পারিবারিক আদালতে তিনি মামলা রুজু করেন নিজের প্রথম স্ত্রীর বিরুদ্ধে।

আদালত সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই ব্যক্তি দ্বিতীয় বিয়ে করেন প্রথম স্ত্রীকে কিছু না জানিয়ে। দ্বিতীয় স্ত্রীকে প্রথম কিছুদিন একটি আলাদা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু কয়েকদিন পর তিনি এক বাড়িতেই দুই স্ত্রীকে নিয়ে থাকতে শুরু করেন।

শুরু হয় প্রবল আর্থিক অনটনের। প্রথম স্ত্রী অভিযোগ তোলেন, তাঁর এবং সন্তানদের ভরণপোষণ ঠিক মতো হচ্ছে না। তিনি বিবাহবিচ্ছেদ চান। সেই সঙ্গে তাঁর ও সন্তানদের ভরণপোষণের ভার স্বামীকেই নিতে হবে।

স্ত্রীর এই দাবির বিরোধিতা করে প্রথম স্ত্রীর বিরুদ্ধে পারিবারিক আদালতে মামলা করেন স্বামী। মামলায় বলেন, খোরপোষ দেওয়ার মতো আর্থিক সঙ্গতি তাঁর নেই। কিন্তু পারিবারিক আদালত তাঁর এই আবেদন মঞ্জুর করেনি। আদালত প্রশ্ন তোলে, আর্থিক সঙ্গতি না থাকা সত্ত্বেও দ্বিতীয় বিয়ে কেন করলেন তিনি?

এরপর পারিবারিক কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধেই এলাহাবাদ হাইকোর্টে মামলা করেন স্বামী। সম্প্রতি উচ্চ আদালত রায় দেয়, আর্থিক সঙ্গতি না থাকলে দ্বিতীয় বিয়ে করা বিধান বহির্ভূত কাজ। উচ্চ আদালত এই ব্যাপারে কোরানের ব্যাখ্যাকেও হাতিয়ার করেছে। বিচারপতির বক্তব্য, কোরান এই ধরনের দ্বিতীয় বিয়ে অনুমোদন করে না। কারণ, তাতে আর একজন নারীকে অমর্যাদা ও বঞ্চনা করা হয়। দ্বিতীয় বিয়ে কোনও অবস্থাতেই প্রথম স্ত্রী’র মৌলিক অধিকার খর্ব করার কারণ হতে পারে না। একথা জানানোর পাশাপাশি বিচারপতি সূর্যপ্রকাশ কেশরওয়ানি ও রাজেন্দ্র কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করা তাঁর প্রতি ক্রূরতারই প্রকাশ।

আবেদনকারী আজিজুর রহমান ও হামিদুন্নিশার বিয়ে হয় ১৯৯৯ সালের ১২ মে। আজিজুর হামিদুন্নিশাকে না জানিয়েই দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সমস্যার সূত্রপাত সেখান থেকেই। এপ্রসঙ্গে সংবিধানের ২১ নম্বর ধারার উল্লেখ করে আদালত জানায়, প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার রয়েছে নিজের মতো করে বাঁচার। তাঁকে সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *