হাথরসে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জমায়েতে তুমুল হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত অন্তত ৫০!

Desk(udita): খবরের শিরোনামে আবারও সেই হাথরস। উত্তরপ্রদেশের এই শহরে এ বার এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল অনেকের। ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সেই হাথরসের এক দলিত তরুণীর গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। সেই হাথরসই আবার পদপিষ্টের ঘটনায় গোটা দেশে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। আর তার সঙ্গে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই ঘটনায় অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জেলাশাসক আশিসকুমার জানিয়েছেন। জানা গিয়েছে, রতিভানপুরে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলছিল মঙ্গলবার। অনুষ্ঠান শেষ হতেই একটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। ওই অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থী জমায়েত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয়। আর তাতে‌ই বেশ কয়েক জনের মৃত্যু আশঙ্কা করা হচ্ছে। এটার পুলিশ সুপার রাজেশ কুমার সিংহ বলেন, “হাথরসের মুঘলাগড়ি গ্রামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলছিল। সেই সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এখনও পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৩ জন মহিলা, তিন শিশু এবং এক জন পুরুষ রয়েছে। কেন এবং কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

স্থানীয় সূত্রে খবর, শিশু এবং মহিলা-সহ ১৫ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে এটা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, একটি প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল মুঘলাগড়ি গ্রামে। একসঙ্গে প্রচুর মানুষ জমায়েত করেছিলেন ওই সভায়। কী কারণে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে। দেহগুলিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সিকন্দরারাউ হাসপাতালে আহতদের নিয়ে গেলেও সেখানে চিকিৎসা করার মতো পর্যাপ্ত চিকিৎসক ছিল না। হাসপাতালে এক জন চিকিৎসক ছিলেন। চিকিৎসার গাফিলতিরও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, ঘটনার পর দেড় ঘণ্টা কেটে গেলেও প্রশাসনের কোনও আধিকারিক আসেননি। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে এই হাথরসই গোটা দেশে আলোড়ন ফেলেছিল। বুলগড়ি গ্রামে মায়ের সঙ্গে মাঠে কাজ করছিলেন এক দলিত তরুণী। মায়ের থেকে ১০০ মিটার দূরেই ক্ষেতে কাজ করছিলেন তিনি। কন্যার চিৎকারের আওয়াজ শুনে তরুণীর মা ছুটে যান। সেখানে যেতেই দেখেন তাঁর কন্যা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। জিভ কেটে নেওয়া হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ না নেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। তরুণীকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে জেএনএমসি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে ১৪ দিন ভর্তি ছিলেন। সেখানেই তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হয়। ২৯ সেপ্টেম্বর তরুণীর মৃত্যু হয়। পরিবারকে না জানিয়ে রাতারাতি ওই তরুণীর দেহ সৎকার করারও অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই উত্তাল হয় গোটা দেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *