প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেলের সাজা হলেও কি পারবেন লড়তে ভোটে? কি বলছে আমেরিকার আইন?

24hrstv desk:  প্রশ্নের মুখে উঠছে ৭৭ বছরের ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। আমেরিকার আইন আনুসারে ট্রাম্পের জেল ও জরিমানা একসঙ্গে দুই নহতে পারে। আমেরিকার ইতিহাসে এই প্রথম প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ফৌজদারি মামলায় সাজার মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে আমেরিকায় শুরু হয়েছে জল্পনা। নিউ ইয়র্ক আদালতের ১১ সদস্যের জুরি বোর্ড তথ্য গোপনের উদ্দেশ্যে ব্যবসায়িক নথিপত্রে জালিয়াতি করার দায়ে ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। যে মামলায় তাঁকে ‘অপরাধী’ ঘোষণা করা হয়েছে, আমেরিকার আইন অনুযায়ী তাতে সর্বোচ্চ সাজার মেয়াদ চার বছরের জেল।নিউ ইয়র্ক আদালতের জুরি বোর্ডের সভাপতিত্বকারী বিচারক জুয়ান মার্চানের পরিচিতি রয়েছে ‘অপরাধীদের কঠোর সাজা’ দেওয়ার জন্য। তবে আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এ ক্ষেত্রে ৭৭ বছরের রিপাবলিকান নেতাকে শুধু জরিমানা দিয়েই ছাড় দিতে পারে আদালত। কারণ, প্রথমত তাঁর বয়স, দ্বিতীয়ত অপরাধের ধরন ‘অহিংস’ এবং তৃতীয়ত, এটাই তাঁর প্রথম অপরাধ। তা ছাড়া দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিসাবে এ ক্ষেত্রে ট্রাম্পের প্রতি জুরি ‘বাড়তি সহানুভূতি’ দেখাতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন সত্তরোর্ধ্ব ওই রিপাবলিকান পার্টির নেতা। পর্নতারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের পরে ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় তাঁর মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্প ১ লক্ষ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ওই টাকা দেওয়ার বিষয়টি গোপন রাখতে ট্রাম্প তাঁর ব্যবসায়িক সংস্থার নথিপত্রে জালিয়াতি করেছিলেন। অবশ্য গোড়া থেকেই ট্রাম্প তাঁর বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তবে শেষ পর্যন্ত জেলে যেতে হলেও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে বাধা থাকবে না ট্রাম্পের। কারণ, সে দেশের আইন অনুযায়ী ফৌজদারি মামলার আসামিও দেশের সর্বোচ্চ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার উপযুক্ত। তবে সাজাপ্রাপ্ত নেতা যদি নির্বাচিত হন, তবে ভোটের পরে কংগ্রেসের দুই কক্ষে তাঁকে ইমপিচ করার প্রক্রিয়া শুরু করা যেতে পারে। ঘটনাচক্রে, ট্রাম্পের সাজা ঘোষণার কয়েক দিন পরই রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় সম্মেলন। ওই সম্মেলনেই তাঁকে আনুষ্ঠানিক ভাবে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার কথা রয়েছে। রিপাবলিকান নেতৃত্ব সর্বসম্মত ভাবে প্রার্থিপদের বিরোধিতা করে প্রস্তাব নিলে সমস্যা বাড়তে পারে ট্রাম্পের। আগামী ১১ জুলাই শাস্তি ঘোষণার আগে ট্রাম্প আদালতে তাঁর ‘চরিত্রের’ বিষয়ে পরিজন এবং পরিচিতদের শংসাপত্র পেশের সুযোগও পাবেন। আমেরিকার আইনে এমন শংসাপত্রে শাস্তি লাঘব হওয়ার সুযোগ থাকে। জেলের সাজা হলেও এখনই তা কার্যকর না-ও হতে পারে। আমেরিকার আইন অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে ম্যানহাটনের রাষ্ট্রীয় আপিল আদালতে আবেদন জানিয়ে স্থগিতাদেশ পেতে পারেন ট্রাম্প। বস্তুত, রায় ঘোষণার পরেই বৃহস্পতিবার ট্রাম্প উচ্চতর আদালতে আবেদনের বার্তাও দিয়ে রেখেছেন। ট্রাম্পের আবেদন সম্পর্কে রায় জানাতে আপিল আদালতের এক বছরেরও বেশি সময় লাগতে পারে বলে আইনজীবীদের একাংশের মত। তত দিনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *