
গলায় মারণফাঁস, এনআরএস হাসপাতালে খুদের জন্ম
24Hrs Tv, ওয়েব ডেস্কঃ দমবন্ধ হয়ে চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম শিশুর। পেটের মধ্যে শিশু নড়াচড়া করলে এমনটা হয়। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রুণা বল জানান, অ্যাম্বিলিকাল কর্ড গলায় পাঁচ প্যাঁচে জড়িয়ে গিয়েছে এমন ঘটনা বিরল। গলায় অ্যাম্বিলিকাল কর্ড জড়িয়ে গিয়ে ধীরে ধীরে কমছিল শিশুর হৃদস্পন্দন। যা থাকার কথা একশো ত্রিশে তাই কমতে কমতে মিনিটে আশি ছুঁই ছুঁই।
অল্পের জন্য রক্ষা সদ্যোজাতর। প্রথমবার অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা মৌসুমী মণ্ডল। লেডি ডাফরিন হাসপাতালের চিকিৎসকরা নর্মাল ডেলিভারির পরামর্শ দেন। সিজারিয়ান নয়, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় শিশুর জন্মের বিষয়ে জোর দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্যদফতর। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রাজেশ বিশ্বাস জানান, বাচ্চা জন্মের সময় তার নাভির সাথে আম্বিলিক্যাল কর্ড সংযুক্ত থাকে। কর্ডের অন্য প্রান্তটি মায়ের জরায়ুর ভিতরের দেওয়ালে প্ল্যাসেন্টাকে সংযুক্ত করে। এই প্লাসেন্টাই শিশুকে মায়ের পেটের মধ্যে পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহ করে। সংযুক্ত আম্বিলিক্যাল কর্ড পুষ্টি বহন ও বর্জ্য নির্মূল করার পথ হিসাবে কাজ করে। নর্মাল ডেলিভারিতে জরায়ু দিয়েই শিশুর মাথা টেনে বের করা হয়। এখানেই হয়েছিল গণ্ডগোল। আল্ট্রাসাউন্ডের ছবি দেখে ঘাবড়ে যান চিকিৎসকরা। মায়ের পেটে গলায় ফাঁস লেগে গিয়েছে শিশুর। সে কারণেই মাথা নামছে না নীচের দিকে। কিন্তু তা যে পাঁচ প্যাঁচে জড়িয়ে যাবে কে জানত? রীতিমতো পাঁচ প্যাঁচে শিশুর গলায় জড়িয়ে গিয়েছিল অ্যাম্বিলিকাল কর্ডটা। শিশুর হার্টসাউন্ড মনিটরিং করার জন্য কার্ডিওটোকোগ্রাফি করা হয়।
ডা. রাজেশ বিশ্বাস জানান, সাধারণত মায়ের পেটের মধ্যে শিশুর হৃদস্পন্দন থাকে মিনিটে ১৩০ থেকে ১৫০-এর মধ্যে। ডা. রাজেশ বিশ্বাসের সঙ্গে অপারেশন টিমে ছিলেন ডা. প্রিয়া কুমারী। গলার ফাঁস কেটে বের করা হয়েছে শিশুটিকে। জন্মের সময় বাচ্চার ওজন ছিল আড়াই কেজির মতো।